আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রুশ বাহিনীর গত এক মাসের অভিযানে এ পর্যন্ত ১৩৫ জন শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছে ইউক্রেনে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির প্রকিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সর্বশেষ শুক্রবার লুহানস্ক অঞ্চলের রুবিঝনে শহরে দুইজন শিশু নিহতের ঘটনা ঘটেছে । শহরটিতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও রুশপন্থী বিদ্রোহীদের মধ্যে গোলাগুলি চলার সময় নিহত হয় এই দুই শিশু।
আগের দিন বৃহস্পতিবার দোনেতস্ক অঞ্চলের নভোমিখাইলিভকা শহরেও সেনাবাহিনী ও রুশপন্থী বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধ চলার সময় গুলির আঘাতে নিহত হয়েছে ৬ ও ১৩ বছর বয়সী দুই শিশু। একই দিন ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের ওবিলনে শহরে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছে ১৩, ১৪ ও ১৫ বছর বয়সী তিন অপ্রাপ্তবয়স্ক।
এ ঘটনার পর ওই তিন অপ্রাপ্তবয়স্ককে নিকটবর্তী শহর মেলিতপোলের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে এবং তিনজনের অবস্থাই বর্তমানে আশঙ্কাজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে।
তবে এই বিবৃতিতে দেওয়া তথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী সদস্য’ মনোনীত করার পর আরও বাড়ে এই দ্বন্দ্ব।
ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শুক্রবার ৩০তম দিনে পৌঁছেছে রুশ বাহিনীর অভিযান।